খাগড়াছড়িতে কৃষিতেই ক্ষতি ৬৭ কোটি টাকা
সম্প্রতি টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে খাগড়াছড়ির ৯টি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পাহাড় ধস, কালভার্ট, ব্রিজ বিলীন ও ভেসে গেছে কোটি কোটি টাকার মাছ। মারা গেছে গবাদি পশু, হাস মুরগি, ভেঙে গেছে কাঁচা ঘর-বাড়ি, গৃহহারা হয়েছে হাজার হাজার পরিবার।
কৃষি নির্ভর জেলা খাগড়াছড়ির সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে খাগড়াছড়ি সদর, দীঘিনালা, মহালছড়ি, মাটিরাঙ্গা ও রামগড় উপজেলায়।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলার ৯টি উপজেলায় কৃষি আবাদি ফসলি জমির পরিমাণ ৬৩ হাজার ৩১৫ হেক্টর। আউশ, আমন, গ্রীষ্মকালীন সবজিসহ অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্ত আবাদি কৃষি ফসলি জমির পরিমাণ ৪ হাজার ১৬১ হেক্টর। টাকার অংকে যার ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৬৬ কোটি, ৭৫ লাখ ৫৪ হাজার টাকা।
এদিকে, কৃষিতে এমন ক্ষতিতে বিপাকে পড়েছেন শত শত দরিদ্র কৃষক। তারা বলছেন, বর্তমানে বন্যার পানি কমলেও নতুন করে রোপা আমন চাষ করার মতো সময় নেই। তাছাড়া সার, বীজ এবং শ্রমিকের মজুরি বাবদ যে অর্থ খরচ হবে সেটাও কৃষকের হাতে নেই। এ মুহূর্তে পুনর্বাসনের জন্য জরুরি ভিত্তিতে বিনামূল্যের বীজ ও সারসহ আর্থিক প্রণোদনা প্রয়োজন।
খাগড়াছড়ি সদরের মুসলিমপাড়ার কৃষক আবু বক্কর, মো. রহিম ও আমির হোসেনের দুই একর জমিতে চাষকৃত গ্রীষ্মকালীন সবজি বন্যার পানিতে সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। সরকারি সহযোগিতা পেলে তারা ঘুরে দাঁড়াতে পারবে বলে জানান তারা।
জেলার সীমান্তবর্তী মাটিরাঙ্গা উপজেলার তবলছড়ির কৃষক হায়দার আলী জানান, টানা বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ৮০ হাজার টাকা খরচে লাগানো সাড়ে ৩ একর জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। আবার বীজ তলায় ধানের চারা বপন করা হয়েছে। চারা পরিপক্ষ হলে রোপণ করা হবে। তবে এ যাবৎ কৃষি বিভাগ বা অন্য কোনো দফতর থেকে কোনো সহায়তা পাননি এবং কেউ খোঁজ খবর নেননি বলে জানান তিনি।
খাগড়াছড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) বাসিসরুল আলম জানান, এরইমধ্যে ৪ শ ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের মাঝে ধানের বীজ, সার ও নগদ অর্থ বিতরণ করা হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে ধারে চারা বিতরণ করা হবে। এছাড়াও জেলায় ১২ হাজার কৃষকের মাঝে চলতি মাসেই আগাম শীতকালীন সবজি বীজ বিতরণ করা হবে।