প্রশাসনের সহযোগিতায় কাপ্তাইয়ে মৎস্য আহরণ স্বাভাবিক, কর্মচাঞ্চল্যে জেলেরা
কাপ্তাইয়ে জেলেরা মাছ আহরণ শুরু করেছে। ফলে মাছ আহরণ স্বাভাবিক হওয়ায় হ্রদের কাপ্তাই মৎস্য বিপনন উপকেন্দ্রে কর্মচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। গত সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কাপ্তাই মৎস্য বিপনন উপকেন্দ্র প্রধান মোঃ জসিম উদ্দীন। এছাড়া কাপ্তাই উপজেলার ওই মৎস্য বিপনন কেন্দ্রে দুইদিনে প্রায় ১৫ টন মাছ আহরিত হয়েছে বলে তিনি নিশ্চিত করেন।
এরআগে গত রোববার দিবাগত মধ্যরাত থেকে মৎস্য আহরণ শুরু হলেও একটি আঞ্চলিক সংগঠনের অতিরিক্ত চাঁদা দাবীর অভিযোগে মাছ আহরণ বন্ধ রেখেছিল কাপ্তাইয়ের ৩০০ জেলে। তবে সোমবার সকাল থেকে মাছ আহরণ ও বিপনন কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কাপ্তাই মৎস্য বিপনন কেন্দ্রের ওই কর্মকর্তা।
এদিকে, কয়েকজন জেলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান- এখনো কাপ্তাই হ্রদের কয়েকটি স্থানে মাছ আহরণ করতে যেতে তারা সাহস পাচ্ছেনা। বিশেষ কিছু স্থানে নিরাপদে থেকে তারা মাছ আহরণ করছে। পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হলে তবেই তাদের সবার মাঝে স্বস্তি ফিরে আসবে বলে তারা জানায়।
এ বিষয়ে কাপ্তাই মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. বেলালের সাথে সোমবার রাত প্রায় ৮টায় মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সহযোগিতায় জেলেরা সোমবার দুপুর থেকে মাছ আহরণের জন্য যায়। প্রশাসনের সহযোগিতা না হলে এটা সম্ভব হতোনা।
কাপ্তাই হ্রদে বর্তমানে কেমন মাছ পাওয়া যাচ্ছে জানতে চাইলে কয়েকজন জেলে জানায়, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার কাপ্তাই হ্রদে আইড় মাছের আহরণ ও আকার বেড়েছে। তবে কেচকি ও ছোট চাপিলা মাছ পাওয়া যাচ্ছে বেশি। বিগত বছরের চেয়ে এবার কাপ্তাই হ্রদে পানি বেশি। ফলে জেলেরা যেসব জায়গায় জাল ফেলে সেখানে ওই পরিমাণ মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ী ঢলের কারণে হ্রদের পানি ঘোলাটে হওয়ায় মাছ পর্যাপ্ত খাবার না পেয়ে সময় অনুযায়ী পারেনি।
প্রসঙ্গত, প্রতি বছরের পহেলা মে' থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত তিন মাস কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণ ও বিপননের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে জেলা প্রশাসন। কাপ্তাই হ্রদে কার্পজাতীয় মাছের সুষম বৃদ্ধি, মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন নিশ্চিতসহ জীববৈচিত্র্য রক্ষায় এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এসময়ে হ্রদের মাছ বিপণনসহ স্থানীয় বরফ কল গুলোও বন্ধ রাখা হয়। তবে চলতি বছর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হ্রদে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি বৃদ্ধি না হওয়ায় প্রথম দফায় ১৫ দিন ও দ্বিতীয় দফায় ২৩ দিন হ্রদে মাছ শিকারের উপর নিষেধাজ্ঞা বাড়ানো হয়। সে হিসেবে ৪ মাস ৭দিন পর শুরু হয় কাপ্তাই হ্রদে মাছ শিকার। এদিকে, রাঙামাটি জেলা মৎস্য আহরণ ও বিপনন কেন্দ্র এবং মারিশ্যা মৎস্য উপকেন্দ্রে মাছ আহরণ স্বাভাবিক থাকলেও একটি আঞ্চলিক দলের অতিরিক্ত চাঁদা দাবীর কারণে কাপ্তাইয়ের জেলেরা মাছ আহরণ বন্ধ রাখে।