সেনাবাহিনীকে জড়িয়ে আবারও ‘হিল ভয়েসের অপপ্রচার’
জেএসএস (সন্তু) পরিচালিত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হিল ভয়েস থেকে ধারাবাহিক ভাবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে অনেক দিন ধরে। মিথ্যাকে রঙ মেখে নানাভাবে কেবল বিতর্কিত করাই নয়, মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা বাঙালি জাতির গর্ব ও আস্থার প্রতীক সেনাবাহিনীকে নিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি করতে হিল ভয়েস নামক ফেসবুক পেজে নিয়মিত মিথ্যা প্রোপাগাণ্ডা বা গুজব প্রচারিত আসছে।
তারই ধারাবাহিকতায় ”জুরাছড়িতে সেনাবাহিনী কর্তৃক ২ ছাত্রকে আটক ও হয়রানি, পরে মুক্তি” শিরোনামে একটি প্রোপাগান্ডা রিপোর্ট প্রচার করে হিল ভয়েস! উক্ত রিপোর্টে উল্লেখ করা হয় ‘রাঙামাটি জেলাধীন জুরাছড়ি উপজেলা এলাকার বাসিন্দা ও রাঙামাটি সরকারি কলেজের ২ জন জুম্ম ছাত্র; জুরাছড়ি থানা শাখার পিসিপি'র সহ সভাপতি সরেশ চাকমা ও সদস্য রনি চাকমা কে সেনাবাহিনী কর্তৃক সাময়িক আটক ও হয়রানির শিকার হয়েছেন মর্মে একটি রিপোর্টটি প্রকাশ করা হয়। যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন অপপ্রচার মাত্র।
এ বিষয়ে সরেজমিন তদন্তে জানা যায়, গত শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) জুরাছড়ি জোনের যক্ষা বাজার আর্মি ক্যাম্পের চেকপোস্ট দিয়ে মটরসাইকেল যোগে যাওয়ার সময় জুরাছড়ি থানা শাখার পিসিপি'র সহ সভাপতি সরেশ চাকমা ও সদস্য রনি চাকমাকে নিরাপত্তাবাহিনীর এক সদস্য গত ২১ ফেব্রুয়ারি-২০২৪ মাতৃভাষা দিবসে শহীদ মিনারে জেএসএস (সন্তু) সমর্থিত পিসিপি'র ব্যানারে ফুল দেওয়ার ছবির সাথে তাদের মিল থাকায় ছবির অন্যান্য সদস্যের নাম ও পিসিপি'র থানা শাখার নতুন কমিটির তথ্যর জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কোন আটক বা হয়রানি করা হয়নি।
এ বিষয়ে সরেশ চাকমার সাথে কথা বলে জানা যায়, ঐদিন যক্ষা বাজার আর্মি ক্যাম্পের চেকপোস্ট দিয়ে যাওয়ার সময় জুরাছড়ির পিসিপি'র থানা শাখার নতুন কমিটির তথ্যর জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিলো। কোন প্রকার আটক বা হয়রানির শিকার হননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জুরাছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা জানান, নানা ইস্যুতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করলেও আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে পাহাড়ের আঞ্চলিক দলগুলো। আগামী ৮মে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের সাধারণ নির্বাচনে রাঙামাটির চারটি উপজেলায় নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। এখানে নির্বাচনে আঞ্চলিক দলগুলো অংশ নেওয়ায় লড়াইয়ের আভাস যেমন মিলছে, তেমনি আছে নানান উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। তিনি আঞ্চলিক দলগুলোর মধ্যে জেএসএস’র দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, বিভিন্ন উপজেলায় তারা প্রার্থী দাঁড় করিয়ে অপহরণ, খুনোখুনির মত অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি সহ নির্বাচনকে সামনে রেখে পাহাড়ে নিরাপত্তায় নিয়জিত সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে। তাছাড়া ‘জুরাছড়িতে সেনাবাহিনী কর্তৃক ২ ছাত্রকে আটক ও হয়রানি, পরে মুক্তি’ শিরোনামে হিল ভয়েস ফেসবুক পেজে যে রিপোর্টটি প্রচার করা হয়েছে তা উক্ত প্রপাগান্ডারই অংশ বলে তিনি মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে, সচেতন মহল বলছেন, হিল ভয়েস নামক ফেসবুক পেজের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে সেনাবাহিনীসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, বেসামরিক প্রশাসন এবং বাঙ্গালি সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে একটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী। এই গোষ্ঠীটি কুকি-চিন, ইউপিডিএফসহ বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীদের স্বার্থ হাসিলে এসব অপপ্রচার চালাচ্ছে। মূলত, এরা পাব্যর্তাঞ্চলে আলাদা একটি রাষ্ট্র গঠন করতে চায়। তাই এই এলাকা থেকে সেনাবাহিনী উৎখাতের জন্য একের পর এক অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে তারা।