সন্তানদের মধ্যে বৈষম্য করা হারাম

আল্লাহ তাআলা সন্তান দিয়ে মানুষকে পরীক্ষা করেন। তিনি কাউকে পুত্রসন্তান দান করেন। কাউকে কন্যাসন্তান দান করেন। কাউকে পুত্র-কন্যা উভয়টি দান করেন। কাউকে এক সন্তান আবার কাউকে একাধিক সন্তান দান করেন।
একাধিক সন্তানের বেলায় মাতা-পিতার দায়িত্ব সব সন্তানকে সমান দৃষ্টিতে দেখা। শোনা যায়, কোথাও কোথাও পুত্রসন্তানদের মধ্যে এক ছেলেকে অন্য ছেলের চেয়ে প্রাধান্য দেওয়া হয়। ইসলামে এটি নিষিদ্ধ।
নুমান ইবনে বশির (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘একবার তার পিতা তাকে নিয়ে রাসুল (সা.)-এর কাছে গেলেন এবং বললেন, আমি আমার এ ছেলেকে একটি গোলাম দান করেছি। রাসুল (সা.) তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি তোমার সব সন্তানকেই এমন দান করেছ? পিতা জবাব দিলেন, না। রাসুল (সা.) বললেন, তাহলে এ গোলাম ফেরত নিয়ে নাও।’ (বুখারি, হাদিস: ২৫৮৬)
হাদিসের প্রসিদ্ধ ছয়টি কিতাবের মধ্যে ‘ইবনে মাজাহ’ ছাড়া বাকি পাঁচটিতেই উপরে উল্লিখিত হাদিস বর্ণিত হয়েছে। এ হাদিসের কোনো কোনো বর্ণনায় এসেছে, ‘তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সন্তানদের মধ্যে ইনসাফ কায়েম করো।’ (মুসলিম, হাদিস: ১৬২৩)
এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে এসেছে : ‘...যখন তোমরা কথা বলবে, তখন ন্যায্য কথা বলবে-যদিও তা স্বজনদের সম্পর্কে হয়। আর আল্লাহ প্রদত্ত অঙ্গীকার পূর্ণ করবে। এভাবেই আল্লাহ তোমাদের নির্দেশ দিচ্ছেন, যেন তোমরা উপদেশ গ্রহণ করো।’ (সুরা: আনআম, আয়াত: ১৫২)
বেশিরভাগ মানুষের কিছু না কিছু সম্পদ থাকে। অনেকে মৃত্যুর সময় কোনো কোনো সন্তানকে সম্পত্তিতে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকেন। এতে অন্যরা বঞ্চিত বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এ বিষয়ে মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘কোনো কোনো ব্যক্তি ৭০ বছর ধরে (গোটা জীবন) নেক আমল করে। কিন্তু অসিয়ত করার সময় জুলুম করে। তখন একটি খারাপ কাজের মাধ্যমে তার জীবনের সমাপ্তি ঘটে। ফলে সে জাহান্নামে যায়। আর কোনো কোনো ব্যক্তি ৭০ বছর ধরে (গোটা জীবন) খারাপ কাজ করে। কিন্তু অসিয়ত করার সময় সে ইনসাফ করে। তখন একটি ভালো কাজের মাধ্যমে তার জীবনের সমাপ্তি ঘটে। ফলে সে জান্নাতে যায়।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ২৮৬৭; তিরমিজি, হাদিস: ২১১৭)