রাঙামাটি । মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪ , ৬ কার্তিক ১৪৩১

নিউজ ডেস্কঃ-

প্রকাশিত: ১৬:৩৬, ১০ জুলাই ২০২৪

রায়ে ’স্থিতাবস্থা’, এখন কী করবেন আন্দোলনকারীরা?

রায়ে ’স্থিতাবস্থা’, এখন কী করবেন আন্দোলনকারীরা?

সরকারি চাকরিতে নিয়োগে ‘অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক’ কোটা বাতিল এবং সংবিধানে উল্লেখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য সংরক্ষিত কোটাকে ন্যূনতম মাত্রায় এনে সংসদে আইন পাস করার দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা। খবর ইনসাইড বাংলাদেশ

আজ বুধবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে শিক্ষার্থীদের একটি দল শাহবাগ মোড়ের সড়ক অবরোধ করেন। এতে এই মোড় হয়ে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তৈরি হয় তীব্র যানজট।

কোটা নিয়ে আদালতের রায়ের পর প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, কোটার বিষয়ে স্থায়ী সমাধানের আগ পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন তারা। বুধবার (১০ জুলাই) সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ের পর প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় এ তথ্য জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।

সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের ওপর স্থিতাবস্থা থাকবে বলে আজ রায় দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগ। তবে এই রায়কে ঝুলন্ত সিদ্ধান্ত হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

তারা বলছেন, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য ন্যূনতম (সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ) কোটা রেখে নির্বাহী বিভাগ থেকে সব ধরনের বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল না করার আগ পর্যন্ত রাজপথে থাকবেন।

এ প্রসঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, আমরা কোনো ঝুলন্ত সিদ্ধান্ত মানছি না। আমাদের এক দফা দাবি- সংসদে আইন পাস করে সরকরি চাকরির সব গ্রেডে শুধু পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য ন্যূনতম (সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ) কোটা রেখে সব ধরনের বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করতে হবে।

আজ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল রেখে হাইকোর্টের দেয়া রায়ে এক মাসের স্থিতাবস্থা জারি করেছেন আপিল বিভাগ। এ সময় আদালত জানান, আগামী চার সপ্তাহ পর পূর্ণাঙ্গ রায় ঘোষণা করা হবে। পূর্ণাঙ্গ রায়ের পর চূড়ান্ত শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।  

আপিল বিভাগের রায়ের পর শাহবাগে অবস্থান নেয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা সাংবাদিকদের জানান, আদালতের প্রতি সম্মান আছে। তবে কমিশন গঠন করে কোটা পদ্ধতির সংস্কার ও স্থায়ী সমাধান  হওয়ার আগে পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

তারা আরও বলেন, হাইকোর্টের সিদ্ধান্তকে সম্মান করি। আমরা ২০২৪ সালে এসে শুধু প্রথম ও দ্বিতীয় নয়, সকল চাকরি থেকে কোটা তুলে নেয়ার এক দফা দাবি আমাদের। আমাদের দাবি হাইকোর্টের কাছে নয়, সংসদের কাছে। সংসদে আইন পাশ করে সকল চাকরি থেকে কোটা তুলে নিতে হবে। আইন অনুসারে ৫ শতাংশ কোটা রেখে সব তুলে নিতে হবে। আমরা স্থায়ী সমাধান চাই। স্থায়ী সমাধান না পাওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়ব না, আন্দোলন চালিয়ে যাব।

এদিকে অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন বলেছেন, আদালতের রায়ের পর আন্দোলন করার আর কোনো যৌক্তিকতা নেই।

২০১৮ সালে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল করে সরকার। পরে ২০২১ সালে কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হাইকোর্টে এর বিরুদ্ধে রিট করেন। গত ৫ জুন হাইকোর্টের এক রায়ের মাধ্যমে আবারও ফিরে আসে কোটা ব্যবস্থা।

এরপর গত ১ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে আন্দোলনে নামে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এর ধারাবাহিকতায় শনিবার রাজধানীর শাহবাগ থেকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা 'বাংলা ব্লকেড' কর্মসূচি ঘোষণা করেন। সে অনুযায়ী রোববার ও সোমবার টানা দুদিন বিকেলে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি পয়েন্টে অবস্থান ও অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন আন্দোলনকারীরা। এছাড়া দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও নিজ নিজ এলাকা থেকে এ কর্মসূচি পালন করেন। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আজ বুধবার সারাদেশে সকাল সন্ধ্যা বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি চলছে।

অন্যদিকে আজ সকাল থেকে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডসহ বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে আরেকটি কর্মসূচি পালিত হচ্ছে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল রাখার দাবিতে।

জনপ্রিয়