রাঙামাটি । মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪ , ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

নিউজ ডেস্কঃ-

প্রকাশিত: ১৬:৪৭, ২৯ নভেম্বর ২০২০

গ্রাম আদালত কার্যকর রাখতে পারলে মামলার চাপ কমবে

গ্রাম আদালত কার্যকর রাখতে পারলে মামলার চাপ কমবে

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম- ফাইল ছবি


গ্রাম আদালত কার্যকর রাখতে পারলে আদালতের ওপর চাপ কমে যাবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম। সেজন্য সরকার গ্রাম আদালতকে যুগোপযোগী, জনবান্ধব ও অধিকতর কার্যকরী করার লক্ষ্যে ‘গ্রাম আদালত আইন-২০০৬’ সংশোধনের উদ্যোগ নেয়ার কথাও জানান তিনি। 
রোববার (২৯ নভেম্বর) এ সম্পর্কিত আইনি কাঠামো সংস্কার এবং সংশোধনীর ক্ষেত্রসমূহ চূড়ান্তকরণের উদ্দেশ্যে ঢাকার একটি হোটেলে জাতীয় পর্যায়ের একটি পরামর্শ সভা আয়োজন করা হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ইউএনডিপির সহায়তায় স্থানীয় সরকার বিভাগ এই পরামর্শ সভার আয়োজন করে।

পরামর্শ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে ৭০ ভাগ মানুষ গ্রামে বাস করে। শহর ও গ্রাম উভয় স্থানের মানুষের জন্য সরকারের জন্য প্রতিশ্রুতি রয়েছে। আমাদের অবশ্যই বিচারপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে তাদের যথাযথ সুবিধা দিতে হবে। গ্রাম আদালত বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একটি দারুণ বিষয়। কারণ অনেক মানুষ ভুল বোঝাবুঝির কারণে আদালতের দ্বারস্থ হন। ফলে সেখানেও চাপ বেড়ে যায়। এখন পর্যন্ত ৩৭ লাখ মামলা বিচারাধীন রয়েছে। খুব ছোট ছোট বিষয় নিয়েও মামলা হচ্ছে। আমি মনে করি, আমরা গ্রাম আদালতকে কার্যকর করতে পারলে আদালতের ওপর চাপ অনেকাংশে কমে যাবে। ফলে মানুষই সুবিধা পাবে, তাদের সময়-অর্থ দু’টোই বেঁচে যাবে।

তিনি বলেন, গ্রাম আদালত আইন ২০০৬ সালে জারির পর ২০১৩ সালে প্রথম সংশোধনী এবং ২০১৬ সালে বিধিমালা জারি করা হয়। কিন্তু নানাবিধ প্রতিকূলতার কারণে গ্রাম আদালত যথাযথভাবে কার্যকরী করা সম্ভব হয়নি। গ্রাম আদালতের বিচার ব্যবস্থায় মানবাধিকারের মূলনীতিগুলোকে প্রাধান্য দেয়া হয়। প্রচলিত বিচার ব্যবস্থায় দোষীকে অপরাধী বলা হয় কিন্তু গ্রাম আদালতে তাকে বলা হয় প্রতিবাদী। গ্রাম আদালতের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হলো- এমনভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যাতে বিবাদমান পক্ষদ্বয়ের মধ্যে সহাবস্থান, সহমর্মিতা, ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিভঙ্গি ও সমঝোতা সৃষ্টি হয়, যাতে ভবিষ্যতে তাদের মধ্যে পুনরায় বিরোধ সৃষ্টি হওয়ার সুযোগ বন্ধ হয়ে যায় এবং পুনর্মিলন ঘটে।

এ সভায় শিখন, সুপারিশ, মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়ন ও প্রতিফলন এবং অর্জিত অভিজ্ঞতা ইত্যাদির আলােকে গ্রাম আদালতের আইনি কাঠামো সংশোধনীর প্রস্তাবনা বিষয়ে বক্তাদের প্রদত্ত সুচিন্তিত অভিমত গ্রামপর্যায়ে স্থানীয় বিচারব্যবস্থা আরো শক্তিশালী করবে, জেলা পর্যায়ের আদালতগুলোতে মামলার সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস করতে ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। 

গ্রাম আদালত সক্রিয় করার কার্যক্রম পরিচালনায় একদশকজুড়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে সরকারের পাশে থাকায় ইউরােপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও ইউএনডিপি বাংলাদেশকে কৃতজ্ঞতা ও সাধুবাদ জানান মন্ত্রী।

স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত রেনসে তিরিঙ্ক ও ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জি। 

সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ প্রকল্পের জাতীয় প্রকল্প পরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব মরণ কুমার চক্রবর্তী, স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মুস্তাকিম বিল্লাহ ফারুকী, প্রকল্প এলাকা থেকে আগত জেলা প্রশাসকবৃন্দ এবং বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ দ্বিতীয় পর্যায় প্রকল্পের সিনিয়র প্রকল্প ব্যবস্থাপক সরদার এম আসাদুজ্জামান।

আলোকিত রাঙামাটি

জনপ্রিয়