কিশোর গ্যাংয়ের হয়রানির শিকার হয়ে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্যের সংবাদ সম্মেলন
খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার মেরুং ইউপিতে অবরসপ্রাপ্ত এক সেনা সদস্য ল্যান্সঃ কর্পোরালকে কে হয়রানীর অভিযোগে সাংবাদিক সম্মেলন করছে ভুক্তভোগী সেনা সদস্য ও তার পরিবার।
বুধবার সকাল (১লা ফেব্রুয়ারি) উপজেলার বাস স্টেশন সংলগ্ন হোটেল ইউনিটির হলরুমে সাংবাদিক সম্মেলন করা হয়। সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, ছোট মেরুং এলাকার ভুক্তোভোগী অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য ল্যান্স কর্পোরাল মোঃ নুর আলম, দুই ছেলে ও তার স্ত্রী।
বক্তব্যে কিশোর গ্যাং এর মাধ্যমে সেনা সদস্যকে ব্লাকমেইল করে ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করা হয় মেরুং ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান রহমান কবীর রতন ও ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মো. হোসেন ও সাবেক মেম্বার আব্দুর রহমানের বিরুদ্ধে।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে বলা হয়, ছোটমেরুং এলাকায় অনিক গ্রুপ নামে একটি কিশোর গ্যাং রয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছে অনিক, রিয়াদ, হযরত, রাজু, শাহানবী ও সুজন। প্রত্যেকেই ভুক্তভোগী সেনা সদস্যের ছেলের সমবয়সি। এরা সবাই মাদকাসক্ত। যার কারণে তিনি নিজের ছেলের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে কিশোর গ্যাংয়ের কার্যকলাপের কথা তাদের বাবাদের কাছে জানান এবং সতর্ক করেন। আর এ কারণেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে গ্যাংয়ের সদস্যরা। এদের মধ্যে সাবেক চেয়ারম্যান রহমান কবীর রতনের ভাতিজা রিয়াদ রয়েছে।
সেখানে তারা আরো বলেন, এই কিশোররা ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে নদীর তীরে ডেকে নিয়ে মারধর করে এবং পরবর্তী সময়ে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। পরে বিষয়টি তিনি থানায় লিখিতভাবে জানান। থানা পুলিশ কিশোরদের আটক করে নিয়ে আসার সময় স্থানীয় মেম্বার হোসেন কিশোরদের বিচার করে শুধরানোর সুযোগ চেয়ে নিজ জিম্মায় রাখেন। কিন্তু কিশোরদের কোনো বিচার না করে ঘটনার পাঁচ দিন পর রহমান কবীর রতন এবং মেম্বার হোসেন এক কিশোরকে দিয়ে বলাৎকারের নাটক সাজান। পরে এসএসসি পরীক্ষার্থী ওই কিশোরের স্কুলের সহপাঠী এবং এলাকার লোকজন দিয়ে বলাৎকারের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করা হবে বলেও হুমকি দিয়ে টাকা দাবি করেন তারা। মানসিক হয়রানির শিকার হয়ে মান-সম্মানের কথা চিন্তা করে ব্ল্যাকমেইলিংয়ের ফাঁদ থেকে বাঁচতে টাকা দেওয়া হয় তাদের। এভাবে তারা এক লাখ ৩৫ হাজার টাকা নিয়েছেন। তাতেও ক্ষান্ত না হয়ে এখনো বিভিন্নজনের কথা বলে টাকা দাবি করে যাচ্ছেন।
নুর আলম আরো জানান, ১৯৯৯ সালে চাকরিতে যোগদান করে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অবসরে যান তিনি। চাকরিজীবনে তিনি সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে বড় ছেলে এইচএসসিতে অধ্যয়নরত এবং ছোট ছেলে নবম শ্রেণিতে পড়ছে। স্থানীয় কিশোর গ্যাং এবং কয়েকজন অর্থলোভী নেতার সাজানো নাটকের কারণে তার পরিবার লোকলজ্জায় বাড়ি থেকে বের হতে পারছে না।
সম্মেলনে নুর আলমের স্ত্রী এবং সন্তানরা কান্নাজড়িত কণ্ঠে সাজানো ঘটনার বিচার দাবি করেন এবং তাদের থেকে নেওয়া টাকা ফেরত পাওয়ার আবেদন জানান।