রাঙামাটি । মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪ , ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

নিউজ ডেস্কঃ-

প্রকাশিত: ১৪:৫৯, ২৪ ডিসেম্বর ২০২০

ভাসানচরে যেতে রোহিঙ্গাদের আগ্রহ, তালিকা হচ্ছে

ভাসানচরে যেতে রোহিঙ্গাদের আগ্রহ, তালিকা হচ্ছে

উখিয়া-টেকনাফের আশ্রয় শিবির থেকে নোয়াখালীর ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। চলতি শুষ্ক মৌসুমে আরও কয়েক দফা তাদেরকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হতে পারে। তবে বিষয়টি নির্ভর করছে রোহিঙ্গাদের সদিচ্ছার ওপর। তারা স্বেচ্ছায় ভাসানচরে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করলেই আরেক দফা স্থানান্তরের উদ্যোগ নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে নতুন করে অনেকেই তাদের আগ্রহের কথা বিভিন্নভাবে জানিয়েছে।

উল্লেখযোগ্য সংখ্যক হলেই তাদের ভাসানচরে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার শাহ্ রেজওয়ান হায়াত। এর আগে ৪ ডিসেম্বর প্রথম দফায় উখিয়ার বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে ১ হাজার ৬৮৫ জন রোহিঙ্গাকে চট্টগ্রাম হয়ে জাহাজযোগে ভাসানচরে নির্মিত আধুনিক সুবিধার আবাসস্থলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানকার পরিবেশ দেখে বেশিরভাগ রোহিঙ্গা তাদের সন্তুষ্টির কথা জানান। কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরের ওপর চাপ কমাতে নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ডের তত্ত্বাবধানে  তাদের ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হয়।

তবে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দাবি, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সমন্বয়ে কারিগরি মূল্যায়ন ছাড়াই সরকার রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর শুরু করেছে। অথচ ২২টি আন্তর্জাতিক সংস্থা রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা দিতে ভাসানচরেই অবস্থান করছে।

শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার শাহ্ রেজওয়ান হায়াত বলেন, প্রথম দফায় যেসব রোহিঙ্গা স্বেচ্ছায় ভাসানচরে গেছেন তাদের ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশের কারণে টেকনাফ ও উখিয়ার বিভিন্ন ক্যাম্পে নতুন করে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে অনেক রোহিঙ্গা সরাসরি এবং তাদের নেতাদের মাধ্যমে ভাসানচরে যাওয়ার আগ্রহের কথা জানিয়েছে। আমরা তাদের তালিকাভুক্ত করে রাখছি। নিয়ে যাওয়ার মতো সংখ্যা হলেই ভাসানচরে পাঠানোর উদ্যোগ নেব।

ইতঃপূর্বে ভাসানচরে যেসব রোহিঙ্গা অবস্থান করছে তাদের কাছ থেকে ওখানকার পরিবেশ ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার কথা জানতে পেরে ক্যাম্পের রোহিঙ্গারা নতুন করে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে জানিয়ে শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার বলেন, ভাসানচরে থাকার জন্য মানসম্মত নতুন পাকা ঘর ও বসবাসের মতো স্বাস্থ্যসম্মত স্থান পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে রোহিঙ্গারা। তারা প্রতিনিয়ত ক্যাম্পের রোহিঙ্গাদের সঙ্গে নানাভাবে যোগাযোগ রাখছে এবং ভাসানচরের সামগ্রিক বর্ণনা ইতিবাচকভাবে তুলে ধরছে। ফলে চলতি শীত মৌসুমে আরও একাধিকবার রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর করা হতে পারে। এ জন্য আমরাও প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।

উল্লেখ্য, রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর করতে ২০১৭ সালেই দ্বীপটিতে আশ্রয়ণ প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। তখন থেকেই জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ আন্তর্জাতিক অর্থায়নে পরিচালিত বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থা এর বিরোধিতা করে আসছে। সব শেষ জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্রও এ স্থানান্তরকে অনুচিত বলে মন্তব্য করেন। তবে প্রথম দফা স্থানান্তরের আগে সরেজমিনে পরিস্থিতি দেখাতে ৪২ রোহিঙ্গার একটি প্রতিনিধি দলকে সেপ্টেম্বরে ভাসানচরে পাঠানো হয়। এর উদ্দেশ্য ছিল সরেজমিন ভাসানচর ঘুরে এসে তারা যেন কক্সবাজারে থাকা রোহিঙ্গাদের সেখানকার পরিবেশ-পরিস্থিতি বাস্তবতার আলোকে তুলে ধরেন।

উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্পে রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ নুর ও হাফেজ জালাল আহমদ জানিয়েছেন, এ মাসের শেষের দিকে আরও রোহিঙ্গাদের একটি দল ভাসানচরে যাওয়ার মত প্রকাশ করেছে।

আলোকিত রাঙামাটি

জনপ্রিয়