রাঙামাটি । মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪ , ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

নিউজ ডেস্কঃ-

প্রকাশিত: ১০:৫৭, ১৭ অক্টোবর ২০২৩

বাংলায় নেমেছে হেমন্তের দিন

বাংলায় নেমেছে হেমন্তের দিন
ছবি: সংগৃহীত

সকালে মৃদু বাতাস। গ্রামের মেঠো পথে কুয়াশার আবচা। শহুরে জনজীবনেও কুয়াশার বিস্তার লক্ষণীয়। চারদিকে যেন কেমন একটা মৌ মৌ গন্ধ। আর বলতে বাকি নেই, শুরু হলো হেমন্তের মিষ্টি দিন। শীতকে পরিচয় করিয়ে দিতে হেমন্তের মিঠে সংগ্রাম শুরু হলো আজ।

বাংলা বর্ষপঞ্জিতে কার্তিকের আগমন মানেই যেন কবি সুফিয়া কামালের ‘হেমন্ত’ কবিতাটি—

সবুজ পাতার খামের ভেতর
হলুদ গাঁদা চিঠি লেখে
কোন্ পাথারের ওপার থেকে
আনল ডেকে হেমন্তকে?

কার্তিক ও অগ্রহায়ণ এই দু মাস নিয়ে হেমন্তকাল। হেমন্ত মানেই শিশিরস্নাত প্রহর। শরতের কাশফুল মাটিতে নুইয়ে পড়ার পরপরই হেমন্তের আগমন ঘটে। এর পরে আসে শীত, তাই হেমন্তকে বলা হয় শীতের পূর্বাভাস। হেমন্তে সকাল বেলা আবছা কুয়াশায় ঢাকা থাকে চারিদিকের মাঠঘাট।সকালে ধান গাছের ডগায় যে শিশির জমে থাকা তা হেমন্তের জানান দেয়।

প্রকৃতিতে বিষণ্ন সুন্দরের একটি রূপ দৃশ্যমান হয় হেমন্তের শুরুতে, যেন কিছুটা নিবিড় অরণ্যের ভেতর অন্ধকার হয়ে আসা ভালো লাগার একটি পরিবেশ। একসময় মরা কার্তিকে এসে কৃষকের গোলা শূন্য হয়ে যেত, সবাই তখন তাকিয়ে থাকত অগ্রহায়ণের দিকে। তবে যতদিন গেছে, ততই বদলে গেছে হিসাবনিকাশ, কার্তিক আর আগের মতো নেই। বস্তুত শস্যের বহুমুখীকরণের ফলে এখন মোটামুটি সারা বছরই ব্যস্ত থাকেন কৃষক আর বিভিন্ন ফসল ফলান তারা, আয়-রোজগারও ভালো। কার্তিক মাসে হূষ্টপুষ্ট হয়ে ওঠে আগাম আমন ধানের শিষ, পাকা ধান কাটা শুরু হয়ে যায়।

ধানের ম-ম গন্ধে ভরে উঠছে চারদিকে। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন—

হেমন্তে কোন্? বসন্তেরই বাণী
পূর্ণশশী ওই-যে দিল আনি
বকুল ডালের আগায়
জ্যোৎস্না যেন ফুলের স্বপন লাগায়।

সাদার মায়া আর মন মাতানো সুবাসে ছেয়ে থাকা শিউলি ফুল যখন আপনার আঙিনায় উজার হয়ে পড়ে থাকে তখনই হেমন্তের শুরু! শুধু কি শিউলি ফুল? দোলনচাঁপার হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া সুগন্ধ আমাদের হেমন্তকালে আবদ্ধ করে রাখার জন্য যথেষ্ট। এছাড়াও হেমন্তে কামিনী, গন্ধরাজ, মল্লিকা, দেবকাঞ্চন, হিমঝুরি, ধারমার, রাজঅশোকসহ নানা ধরনের ফুল ফোটে।

শরৎকাল বর্ষার কিছুটা পরে আসে। শরতের শেষ ভাগে এসে বৃষ্টি কিছুটা কমতে থাকে। সারি সারি মেঘ ভেসে বেড়ানো আকাশের গায়ে এসে পড়ে কুয়াশার আলতু স্পর্শ। হেমন্তের শুরুটা সেখান থেকেই। তবে শহরে হেমন্তের ঋতুর বৈশিষ্ট্য কিছুটা ভিন্ন। দিনগুলো একটু একটু করে কীভাবে যেন ছোট হয়ে আসে। বেলা পড়ে গেলেই সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসে দ্রুত। রোদও হারিয়ে ফেলতে থাকে তার তেজ। এসব দেখেই সবার অনুভব হয় বদলে যাচ্ছে ঋতু।

হেমন্ত চলে এসেছে। মনোমুগ্ধকর এই ঋতুতে চাইলে আপনি অনেক কিছু করে সময় কাটাতে পারেন। যে কারণগুলোর জন্য হেমন্ত কাল সবার কাছে প্রিয় জানতে লেখাটি পড়তে থাকুন। আকাশের এই সৌন্দর্য যেন পৃথিবীর বাকি সবকিছুকেই হার মানায় মন জুড়িয়ে যাওয়া সৌন্দর্যের বর্ণনা দেয়া কি সহজ? মোটেও না।

জনপ্রিয়