রাঙামাটি । মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪ , ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

নিউজ ডেস্কঃ-

প্রকাশিত: ১১:০০, ২৭ নভেম্বর ২০২০

মামুনুল হককে চট্টগ্রামেও প্রতিহতের ঘোষণা

মামুনুল হককে চট্টগ্রামেও প্রতিহতের ঘোষণা

মামুনুল হককে চট্টগ্রামে প্রতিহতের ডাক দিয়ে ছাত্রলীগের মিছিল। ছবি: সংগৃহীত 


মামুনুল হক হুমকি দিয়েছেন, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ বন্ধ না হলে ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরের মতো পরিস্থিতি আবার তৈরি করা হবে। এই বক্তব্য দেয়ার পর দেশের বিভিন্ন এলাকায় তিনি তার মজলিস করতে পারেননি। শীতকালে এই মজলিসগুলো তার আয়ের একটি বড় উৎস।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য বুড়িগঙ্গায় ফেলে দেয়ার হুমকি দেয়া হেফাজত ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে চট্টগ্রামে ঢুকতে না দেয়ার ঘোষণা এসেছে।

বৃহস্পতিবার বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে জঙ্গিবাদবিরোধী এক সমাবেশ থেকে এই ঘোষণা দেয়া হয়। সমাবেশ শেষে মামুনুল হকের একটি কুশপুতুল দাহ করা হয়।

চট্টগ্রাম নগর ছাত্রলীগের আয়োজনে এই সমাবেশে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা, যুবলীগ, শ্রমিক লীগ ও আওয়ামী লীগ নেতারা অংশ নেন। অংশগ্রহণকারী নেতাকর্মীরা প্রায় সবাই প্রয়াত নেতা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত। মহিউদ্দিনের মৃত্যুর পর বর্তমানে তারা মহিউদ্দিনপুত্র শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছেন।



মামুনুল হককে চট্টগ্রামেও প্রতিহতের ঘোষণা


চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নিয়ে কটূক্তিকারী মামুনুল হককে চট্টগ্রামের পাশাপাশি সারাদেশে কোথাও সভা করতে দেয়া হবে না।

রাজধানীর ধোলাইপাড়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নির্মাণের বিরুদ্ধে অবস্থান দিয়েছে ধর্মভিত্তিক কয়েকটি দল। এটি নির্মাণের বিরুদ্ধে সমাবেশ করে ভাস্কর্য বুড়িগঙ্গায় ফেলে দেয়ার হুমকিও এসেছে।

মামুনুল হক হুমকি দিয়েছেন, ভাস্কর্য নির্মাণ বন্ধ না হলে ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরের মতো পরিস্থিতি আবার তৈরি করা হবে।

এই বক্তব্য দেয়ার পর দেশের বিভিন্ন এলাকায় মামুনুল হক তার মজলিস করতে পারেননি। শীতকালে এই মজলিসগুলো তার আয়ের একটি বড় উৎস।

শুক্রবার চট্টগ্রামে হাটহাজারীর পার্বতী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আল আমিন সংস্থা আয়োজিত এক মাহফিলে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে মামুনুল হকের।

মাহফিলে অন্য বক্তাদের মধ্যে আছেন হেফাজত নেতা জুনাইদ আল-হাবীব ও হাফেজ হাসান জামিল। হেফাজতের আমির জুনাইদ বাবুনগরীর উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।



মামুনুল হককে চট্টগ্রামেও প্রতিহতের ঘোষণা


সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য না এলেও সাংবাদিকদেরকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ধোলাইপাড়েরটা হবেই, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধুর আরও একটি ভাস্কর্য নির্মিত হবে। আর ইসলামী দলগুলোর বক্তব্যের জবাব না দেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, যেখানে সেখানে যার তার বক্তব্যের জবাব দেন না তারা।

চট্টগ্রামে যারা এই কর্মসূচির আয়োজন করেছেন, তারা যার অনুসারী সেই শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল অবশ্য প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন কড়া। তিনি ‘মৌলবাদী গোষ্ঠীকে’ বেশি বাড়াবাড়ি না করতে হুঁশিয়ার করে নওফেল বলেছিলেন, ‘বেশি বাড়াবাড়ি করলে ঘাড় মটকাতে সময় লাগবে না।’

মামুনুল হকের চট্টগ্রাম সফরের আগের দিন সমাবেশে চট্টগ্রাম নগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এম আর আজিম বলেন, ‘মামুনুল হক বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন, তা দেশদ্রোহের শামিল। তাকে চট্টগ্রামে ঢুকতে দেয়া যাবে না।’


মামুনুল হককে চট্টগ্রামেও প্রতিহতের ঘোষণা


তিনি বলেন, চট্টগ্রাম মাস্টারদা, প্রীতিলতা, মনিরুজ্জামান, জহুর আহম্মদ চৌধুরী, এমএ মান্নান, এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তিকারীর স্থান বীর চট্টলায় হবে না।

সভাপতির বক্তব্যে নগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমু বলেন, ‘স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যে মন্তব্য মামুনুল হক করেছে তার নিন্দা জানাই। তাকে ধিক্কার জানাই। তার সমাবেশ চট্টগ্রামের মাটিতে হবে না। ধর্মকে পুঁজি করে তারা সন্ত্রাস নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে চায়।’

নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর বলেন, ‘মামুনুল হককে প্রতিহত করতে চট্টগ্রামের প্রতিটি প্রবেশস্থলে পাহারা বসাবে ছাত্রলীগ। যেকোনো মূল্যে তাকে প্রতিহত করা হবে।’

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শুকলাল দাশ বলেন, ’চট্টগ্রাম থেকে বার বার অসাম্প্রদায়িকতাকে প্রতিষ্ঠা করার সংগ্রাম হয়েছে। এই চট্টগ্রাম থেকে গোলাম আজমকে প্রতিহত করা হয়েছে। সাঈদীর মাহফিল বন্ধ করা হয়েছে। সবাই মিলে আমরা জঙ্গিবাদীদের প্রতিহত করব।’

সমাবেশে বক্তব্য দেন নগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. সালাউদ্দিন, ওমর গনি এমইএস কলেজ ছাত্রলীগ নেতা আরশেদুল আলম বাচ্চু, চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি মাহমুদুল করিম প্রমুখ।

আলোকিত রাঙামাটি

জনপ্রিয়