রাঙামাটি । শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪ , ১৯ বৈশাখ ১৪৩১

নিউজ ডেস্কঃ-

প্রকাশিত: ১৫:০৪, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

পুরোদমে চলছে ইজতেমার প্রস্তুতি

পুরোদমে চলছে ইজতেমার প্রস্তুতি

কড়া নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে বিশ্ব ইজতেমা মাঠে প্যান্ডেলসহ বিভিন্ন কাজ চলছে। আর মাত্র ৬ দিন পর শুরু হচ্ছে গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমাবেশ দু’পক্ষের বিশ্ব ইজতেমা।

এবারই প্রথম ৪ দিন ব্যাপী বিশ্ব ইজতেমা হবে। প্রথম পক্ষ শুক্রবার থেকে শুরুর কথা থাকলেও তারা বৃহস্পতিবার শুরু করে শনিবার আখেরি মোনাজাত শেষ করে মাঠ রাতেই ছাড়বেন। আর ২য় পক্ষ সাদ পন্থীরা রোববার শুরু করে সোমবার আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে এবারের বিশ্ব ইজতেমার ইতি টানবেন । শুক্রবার টঙ্গীর তুরাগ তীরে ইজতেমা ময়দানে গিয়ে দেখা যায়, মুসল্লিরা স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে ইজতেমা ময়দানের বিশাল সামিয়ানা টাঙ্গানোসহ যাবতীয় কাজ করছেন। ঢাকা ও গাজীপুরসহ আশপাশের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা দল বেধে ইজতেমা ময়দানে এসে বিশাল প্যান্ডেলের কাজ করছেন। 

গত বুধবার ত্রীপক্ষীয় বৈঠকের পর ইজতেমা ময়দানের সামিয়ানাসহ বিভিন্ন কাজ শুরু হয়েছে। আয়োজক কমিটি ও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয় ১৫ ফেব্রুয়ারির আগেই ইজতেমা ময়দান মুসল্লিদের জন্য প্রস্তুত থাকবে। জেলা ওয়ারি বিভিন্ন খিত্তায় মুসল্লিরা অবস্থান করবেন। 

এবারের বিশ্ব ইজতেমায়ও দেশ বিদেশের মুসল্লিদের সমাগম ঘটবে বলে আশা করা হচ্ছে। দুপক্ষের বিবাদ এড়াতেই সরকার একটানা ২দিন করে ৪ দিনের বিশ্ব ইজতেমার প্রস্তুতি গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়। মুসল্লিদের যাতায়াতসহ ময়দানে সুযোগ-সুবিধার লক্ষ্যে বিশ্ব ইজতেমা দু’পক্ষকে  ভাগ করে হাজির হওয়ার জন্য তবলিগ অনুসারীদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এখানে সবকিছুই হয়ে থাকে বিশ্ব তবলিগ জামায়াতের সর্বোচ্চ মজলিশে সূরার নির্দেশনা অনুযায়ী। 

ইজতেমার ময়দান জুড়ে টাঙানো হচ্ছে চটের সামিয়ানা। বিদ্যুতের তার,গ্যাসের লাইন ও পানির পাইপ টানার কাজও চলছে একই সঙ্গে। বিশ্ব ইজতেমা সফল ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন এবং দ্বীনের মেহনত কায়েমের লক্ষে জোড় ইজতেমা থেকেই মুসল্লিরা দলে দলে ভাগ হয়ে ইজতেমার মাঠে কাজ করতেন। তবে এবার বিবাদের কারণে জোড় ইজতেমা না হওয়ায় কাজের কিছুটা বিড়ম্বনা হতে পারে। 

এবারো মাঠের পশ্চিম পাশের অংশ থেকে চটের ছাউনি, মঞ্চ ও বিদেশি মেহমানদের তাঁবুসহ অন্য কাজ শুরু হয়েছে। এদিকে অজু গোসলের স্থান ও টয়লেট পরিস্কার পরিছন্ন করা হচ্ছে। কিছু রাস্তাও মেরামত শুরু হয়েছে। জেলাওয়ারি ভাগ করা হচ্ছে খিত্তা। বিদেশি মেহমানদের জন্য ময়দানের উত্তর পশ্চিম পাশে তৈরি করা হচ্ছে টিনসেডের আলাদা থাকার জায়গা। একদিকে প্যান্ডেলের সামিয়ানা টানানো, বিদেশি মেহমানদের কামরার দক্ষিণ পূর্ব পাশে মূল মঞ্চের কাজ করা হচ্ছে। অপরদিকে বাশের খুঁটি সাটানো শেষে বৈদ্যুতিক তার ও বাতি লাগানো করতে দেখা গেছে। তুরাগ নদী পারাপারের সুবিধার্থে সেনাবাহিনী অস্থায়ী সেতু নির্মাণ করছেন। যাতে করে মুসল্লিরা এপার ওপার সেতুবন্ধন তৈরি করতে পারেন।

যোবায়ের গ্রুপের সাফা জিম্মাদও ফকির আতাউর রহমান বলেন, আগামী বুধবারের মধ্যেই প্যান্ডেলের কাজ শেষ হবে। বৃহস্পতিবার থেকে তাদের ইজতেমা শুরু হয়ে শনিবার আখেরি মোনাজাত হয়ে ইজতেমা শেষ হবে।

সুরা সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মেজবাউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা একটি যুদ্ধের মধ্যে ইজতেমার কাজ শুরু করছি। আমাদের দেড় মাসের কাজ এখন মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে শেষ করে ইজতেমার প্রস্তুতি শেষ করতে হবে।

জিএমপি কমিশনার ওয়াই এম বেলালুর রহমান বলেন, এবারো সেনাবাহিনী, র‌্যাব, পুলিশ, আনসার ও সাদা পোশাকে কয়েক হাজার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আগত মুসল্লিদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবেন। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে থাকবে শর্টসার্কিট ক্যামেরা এবং পুলিশ ও র‌্যাবের পর্যবেক্ষণ টাওয়ার। এরইমধ্যে পুলিশের কন্ট্রোল রুম ও মাঠের চারিদিকে পর্যবেক্ষণ টাওয়ার তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। অন্যান্য বছরের চেয়ে নিরাপত্তা আরো বেশি জোরদার করা হবে। 

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এবারের বিশ্ব ইজতেমা সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করার লক্ষে কন্ট্রোল রুম, চিকিৎসা সেবা, খাবারের মান নিশ্চিত করতে সিটি কর্পোরেশনের মোবাইল কোর্টসহ ব্যাপক কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার সিটি কর্পোরেশনের টঙ্গী আঞ্চলিক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে জেলার সব দফতরের প্রধান ও ইজতেমা আয়োজক কতৃপক্ষের সমন্বয় সভা হবে। 

১৯৬৭ সাল  থেকে নিয়মিত বিশ্ব ইজতেমা হচ্ছে। ১৯৯৬ সালে একই বছর ২ বার বিশ্ব ইজতেমা হয়েছিল। ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের স্থান সংকুলান না হওয়ায় ২০১১ সাল থেকে দুই পর্বে ইজতেমার আয়োজন করা হয়। ২০১৫ সাল থেকে দেশের ৬৪ জেলাকে দুই  ভাগে বিভক্ত করে ৩২ জেলার তবলিগের মুসল্লিদের দুই পর্বে বিশ্ব ইজতেমায় অংশ গ্রহণ করছেন।

আলোকিত রাঙামাটি

জনপ্রিয়