রাঙামাটি । মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪ , ২৩ বৈশাখ ১৪৩১

জুরাছড়ি প্রতিনিধিঃ-

প্রকাশিত: ১৬:১৫, ১৫ মার্চ ২০২৩

জুরাছড়িতে যাতায়াতের দুভোর্গ ডুবা চর

জুরাছড়িতে যাতায়াতের দুভোর্গ ডুবা চর

রাঙামাটির কাপ্তাই লেকের পানি অস্বাভাবিক ভাবে শুকিয়ে যাওয়ায় জুরাছড়ি-রাঙামাটির যাতায়তে চরম ভাবে দুভোর্গ ও অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হচ্ছে যাত্রী এবং পণ্য পরিবহনে। প্রশাসনিক কোন নজরদারি না থাকায় ভাড়া বাড়ছে আর বাড়ছে অভিযোগ যাত্রীদের।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জুরাছড়ি উপজেলাবাসীর রাঙামাটি শহরের একমাত্র যোগাযোগ মাধ্যম নৌ-পথ। উপজেলার প্রবাহিত শলক খালে বেয়ে বরকল উপজেলার কর্ণফুলি নদীতে মিলিত হয়। কাপ্তাই হ্রদ ও শলক খাল বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অনাবৃষ্টি, খরা, তলদেশ ভরাটসহ পানির স্তর অস্বাভাবিক হারে হ্রাস পেয়ে কাপ্তাই হ্রদ এখন জীর্ণ জলাশয়। অসংখ্য ডুবো চর জেগে উঠেছে নৌযান চলাচল পথে। শলক খালের পানি অস্বাভাবিক ভাবে শুকিয়ে যাওয়ায় এলাকাবাসীর এখন ভরসা স্থানীয় লেজ লম্বা (বার্মিজ বোট)। এক হাত পানির গভিরতায় প্রতি বোটে ৪/৫ জন যাত্রী নিয়ে কোন রকমে বরকলের নতুন বাজারে (স্বাগতম জুরাছড়ি) পৌঁছানো যায়। এতে ভাড়া গুনতে হয় ১শ’ পঞ্চাশ টাকা। এর পর লাইনের লঞ্চে আসা লাগে রাঙামাটি। এতেও ভাড়া গুনতে হয় নব্বই টাকা। এতেও সঠিক সময়ে পৌঁছানো নিশ্চয়তা থাকেনা।

যক্ষাবাজারের মুদির দোকানদার দেবাশীষ দেব নাথ, মিঠূ পাল ও নীল মুনি চাকমা বলেন, পানি শুকিয়ে যাওয়াই মালামাল আনা খুবই কষ্ট হচ্ছে। অতিরিক্ত ভাড়া ছাড়াও সঠিক সময়ে পৌঁছানো অনিশ্চিত থাকে। এসবের মধ্যে কোন রকমে ব্যবসা ধরে রেখেছি।

উপজেলা হোটেল ব্যবসায়ী মোঃ আলী বলেন, পরিবহনে অতিরিক্ত খরচের কারনে ৫/৭ প্রকারের নাস্তা তৈরী বন্ধ করে দিয়েছি।

যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেন, বোট চরে আটকে পড়াই জেলা অফিসে সভায় সঠিক সময়ে পৌঁছাতে পারিনি।

কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোহাম্মদ মাহফুজ আহম্মদ বলেন, জরুরী কোন কাজে রাঙামাটি গেলে সঠিক সময়ে পৌঁছানো সম্ভব হয়না।


বনযোগীছড়া ইউপি চেয়ারম্যান সন্তোষ বিকাশ চাকমা বলেন, কাপ্তাই লেকের শলক খালটি পরিকল্পিত ভাবে ড্রেসিং খুবই জরুরী। এ অবস্থায় চলতে থাকলে আগামী ২/৩ বছরে শুস্ক মৌসুমে নদীতে পানি থাকবেনা। এতে আরো ভোগান্তি চারগুন হারে বেড়ে যাবে। শুধু তাই নয়- শলক খালে পানি না থাকলে ২২০ হেক্টর অধিক বোরো জমি চাষাবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।

উপজেলা চেয়ারম্যান সুরেশ কুমার চাকমা বলেন, জুরাছড়ির এখন যাতায়তের দুভোর্গ শুস্ক কাপ্তাই হ্রদ। শুস্ক মৌসুম এলেই বেড়ে যায় যাত্রীদের ভোগান্তী ও অতিরিক্ত পরিবহন খরচ। কাপ্তাই হ্রদের পাশাপাশি উপজেলার প্রবাহিত শলক খাল ড্রেসিং খুবই জরুরী।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিতেন্দ্র কুমার নাথ বলেন, শলক খালে দিন দিন পানি শুকিয়ে যাচ্ছে বাড়ছে যাত্রীদের ভোগান্তিও। বরকলের আমতলা পর্যন্ত গাড়ী যোগে যাতায়তের জন্য রাস্তা উন্নয়নে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া শলক খাল রক্ষায় ড্রেসিং করার জন্য সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে অনুরোধ জানানো হবে।

সম্পর্কিত বিষয়:

জনপ্রিয়