রাঙামাটি । সোমবার, ২০ মে ২০২৪ , ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

কাপ্তাই প্রতিনিধিঃ-

প্রকাশিত: ১৭:১৩, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১

অবশেষে কাপ্তাই ব্যাঙছড়ি মারমা পাড়াবাসীর দীর্ঘ কষ্টের অবসান

অবশেষে কাপ্তাই ব্যাঙছড়ি মারমা পাড়াবাসীর দীর্ঘ কষ্টের অবসান
এলজিইডির অর্থায়নে নির্মিত ব্যাঙছড়ি ব্রিজ।

মোঃ নজরুল ইসলাম লাভলু, কাপ্তাইঃ- কাপ্তাই উপজেলাধীন ৪নং কাপ্তাই ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের একটি পাড়া ব্যাঙছড়ি মারমা পাড়া।

কাপ্তাই সড়ক দিয়ে চিৎমরম খিয়াং ঘাট পার হয়ে হাতের বাম পাশে প্রায় আড়াই কিঃ মিঃ পথ পাড়ি দিয়ে এই পাড়ায় যেতে হয়। সবুজের সমারোহ একটি শান্ত মনোরম গ্রাম। প্রকৃতির কোলে শুয়ে আছে এই দৃষ্টি নন্দন গ্রামটি। এই গ্রামে ১শ' ১৪টি মারমা পরিবারের বসবাস। জনসংখ্যা প্রায় ৩শ'। কৃষি এবং জুম চাষের উপর এদের জীবন জীবিকা চলে। আদা, হলুদ, আম, কাঁঠাল ইত্যাদি কৃষিজাত পণ্য উৎপাদন করে তারা প্রায় ৪ কিঃ মিঃ পথ পাড়ি দিয়ে কাপ্তাইয়ের জেটিঘাট কিংবা নৌ পথে পার হয়ে চিৎমরম সাপ্তাহিক বাজারে এসব পণ্য  বিক্রি করে জীবনধারণ করে।

তবে কাপ্তাই সড়ক হতে ব্যাঙছড়ি পাড়ার যাওয়ার মাঝখানে একটি মাত্র ব্রিজের কারনে দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসীকে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ব্রিজের জরাজীর্ণ অবস্থা থাকায় সড়কে যান চলাচল করতে না পারায় তাদেরকে পায়ে হেঁটে কাঁধে করে এসব পণ্য বিক্রি করে আবার সাংসারিক নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য হাটবাজার হতে কিনে এনে একই পথে পায়ে হেঁটে আসতে হতো।

অবশেষে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অর্থায়নে ২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ৫৭ মিটার গার্ডার ব্রিজ নির্মাণের কাজ গত বছরের ১৫ জুন শুরু হয়। অতি দ্রুত ১ বছর ২ মাসের মাথায় এই ব্রিজের নির্মাণ কাজ চলতি সপ্তাহে শেষ হয়। গত ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখ আনুষ্ঠানিকভাবে এই ব্রিজের নির্মাণ কাজ শেষে উদ্বোধন করেন খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও রাঙামাটি পার্বত্য জেলার সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার।

এ সময় তিনি ব্যাঙছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত সুধী সমাজে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গত এক দশকে পার্বত্য চট্টগ্রামের সড়ক, অবকাঠামোগত উন্নয়নে শত শত কোটি টাকার বরাদ্দ দিয়েছেন।

ব্যাঙছড়ি মারমা পাড়ার কার্বারি মংসিলা মারমা জানান, তারা আগে অনেক কষ্ট করেছেন। তাদের উৎপাদিত কৃষি পণ্য বাজারে নিয়ে যেতে অনেক কষ্ট হতো। এই ব্রিজ হওয়ার পর তাদের কষ্ট দুর হলো।

ব্যাঙছড়ি মারমা পাড়ার অধিবাসী উচিংথোয়াই মারমা (লাল ভাই) ব্রিজটি নির্মাণ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এখন তারা হাট বাজারে পণ্য বিক্রি করে নায্যমূল্য পাচ্ছে।

ব্যাঙছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আউসান উল্লাহ জানান, একসময় এই ব্রিজটা না থাকায় ওই এলাকায় ছড়ার মধ্যে সাঁতার কেটে শিক্ষক শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসা যাওয়া করতো। আজ সে অবস্থার উন্নতি হয়েছে।

ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সজিবুর রহমান জানান, সরকার এই এলাকার অনেক উন্নয়ন করেছেন এবং উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রয়েছে।

৪নং কাপ্তাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আবদুল লতিফ এই ব্রিজ নির্মাণে সরকার এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদারকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, এই ব্রিজ নির্মাণের ফলে এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দুঃখের অবসান হলো।

কাপ্তাই উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও রাঙামাটি জেলা পরিষদ সদস্য অংসুই ছাইন চৌধুরী জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুপ্রেরণায় রাঙামাটি গণ মানুষের নেতা দীপংকর তালুকদারের উদ্যোগে এই এলাকায় রাস্তাঘাট, ব্রিজ হয়েছে এবং ব্যাঙছড়িবাসী বিদ্যুতের আওতায় এসেছে। 

এলজিইডি রাঙামাটির নির্বাহী প্রকৌশলী আবু তালেব চৌধুরী জানান, দ্রুততম সময়ের মধ্যে ২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ব্যয়ে এই ব্রিজটি তারা নির্মাণ করেছেন। ফলে এলাকাবাসীর কষ্ট দুর হলো।

আলোকিত রাঙামাটি