রাঙামাটি । বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪ , ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

নিউজ ডেস্কঃ-

প্রকাশিত: ১৬:৩২, ২৭ ডিসেম্বর ২০২০

মৃত‌্যুর আগে আল্লামা শফীকে জিম্মি করেছিল যারা

মৃত‌্যুর আগে আল্লামা শফীকে জিম্মি করেছিল যারা

হাটহাজারী মাদরাসার খেদমতে নিবেদিত শাহ আহমদ শফীর জীবনের শেষদৃশ্য ছিল বড় করুণ। ওই অন্তিম শেষ তিন দিনে তাঁর পাশে ছিলেন নাতি মাওলানা আরশাদ এবং একান্ত খাদেম হাজোইফা আহমদ। তাদের নিজ জবানিতে তারা বর্ণনা করেছেন ওই বিক্ষুব্ধ সময়ের পূর্ণ চিত্র।

১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০, আহমদ শফী সুস্থ ও স্বাভাবিক ছিলেন। ছেলে আনাস মাদানী ঢাকায় ছিলেন। জোহরের নামাজের পর মাঠে হৈ চৈ এর আওয়াজ শুনতে পেয়ে একজন শিক্ষক হজরতের কামরায় এসে খবর দেন, ছাত্ররা মাঠে চিৎকার করছে, আনাস মাদানীর বহিস্কারের দাবি জানাচ্ছে। কিছুক্ষণ পর খবর আসে, আনাস মাদানীর কক্ষের দরজা-জানালা ভেঙে লুটপাট করছে সন্ত্রাসীরা। আন্দোলনকারী সন্ত্রাসীরা হাটহাজারী মাদরাসার শেখ আহমদ সাহেবের কক্ষের দরজা ভেঙ্গে মুহতামিম সাহেবের কামরায় আসতে বাধ্য করে।

শেখ আহমদ সাহেবের সঙ্গে উগ্রপন্থী নেতা হাসানুজ্জামানের নেতৃত্বে পাঁচজনের একটি দল মুহতামিম কার্যালয়ে প্রবেশ করেই অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে এবং মাদানীকে বহিষ্কার করার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। তখন হুজুর বলেন, ‘আনাসের যেসব দোষ রয়েছে, তা লিখিত আকারে অভিযাগ করে জানাও, আমি দস্তখত দিব।

দলের সদস্যরা প্রমাণসহ সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ উপস্থাপন করতে না পারায় আহমদ শফী বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলেন না। উগ্রপন্থীদের ২০/২৫ জনের আরেকটি দল আন্দোলনকারী নেতা শহিদুল্লাহর নেতৃত্বে প্রথম দলের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পারে যে, মুহতামিম সাহেব তাদের ভিত্তিহীন দাবি মানতে পারছেন না। এ সময় কার্যালয়ের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ছাত্রদের হুমকিধমকি ও জোর জবরদস্তি করে দরজার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় ছাত্র আন্দোলনকারী নামধারী কিছু সন্ত্রাসী। মাওলানা নুরুল ইসলাম (কক্সবাজার), মুফতী উসমান, আনাস মাদানী ও দিদার কাসেমীর কামরা ভাংচুর করে রশিদ বইসহ লক্ষ লক্ষ টাকা লুট করে। বিক্ষোভকারীরা বিশ-পঁচিশজনের একটি শুরা কমিটি গঠন করে প্রত্যেকের নেতৃত্বে আন্দোলনকারী ৪০/৫০ জনের একেকটি দল গঠন করা হয়। এই দলের যত ব্যয় হত সব তারা উস্তাদদের কামরায় লুটপাট করা অর্থের মাধ্যমে বহন করত!

আল্লামা শফীকে হত্যার পেছনে ‘উগ্রবাদী’ শক্তির হাত আছে দাবি করে মাইনুদ্দিন বলেন, ‘উগ্রবাদীরা এখানে জড়িত, বর্তমান হেফাজতের যে কমিটি করা হয়েছে সেখানে এই উগ্রবাদীদের নামও আছে। ’৭১-এর যুদ্ধাপরাধীদের কায়দায় সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে আমার ভগ্নিপতিকে হত্যা করা হয়েছে। আমার ছোট ভাগনে আনাস মাদানীকে বাবার জানাজায় পর্যন্ত আসতে দেয়নি।’

তিন মাসেও ঘটনা তদন্তে হেফাজত নেতাদের আশ্বাস পাননি জানিয়ে মাওলানা মাইনুদ্দিন আরও বলেন, ‘আমি গত তিন মাস পর্যন্ত হেফাজতের বড় বড় নেতার কাছে গিয়ে এর প্রতিকার চেয়েছি। কিন্তু তারা কোনো আশ্বাস না দেয়ায় শেষ পর্যন্ত আমি আদালতের কাছে বিচারের প্রার্থনা করেছি। মাননীয় আদালত আমার বক্তব্য শুনে পিবিআইকে (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন।’

আলোকিত রাঙামাটি

জনপ্রিয়